বাংলা প্রায় 30 কোটি মানুষের কমিউনিকেশনের মাধ্যম এবং বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষা। কিন্তু সত্তর ও আশির দশকে কম্পিউটার বিপ্লবের সময় কম্পিউটারে বাংলা লেখা যেত না। ৮০ দশকের মাঝামাঝি কম্পিউটারে বাংলা লেখার জন্য বেশকিছু টাইপিং ইন্টারফেস আসলেও সেগুলো আসলে টাইপরাইটারের ইন্টারফেসকে কম্পিউটারের জন্য কনভার্ট করাতে অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। সে সময় কম্পিউটারে বাংলা ভাষার লেখাতে আরো সহজলভ্য করতে বাজারে আসে তরুণ এক সাংবাদিক মোস্তফা জব্বারের বিজয়। সেসময় লেটেস্ট ইনকোডিং এবং টেকনোলজির এডাপশনে অন্যান্যদের পেছনে ফেলে নব্বইয়ের দশক নাগাদ বিজয় হয়ে ওঠে কম্পিউটারে বাংলা লেখার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। অথচ সেই বিজয় কিবোর্ডে দুই দশক পর নতুন প্রযুক্তির সামনে নিজের অবস্থান হারাতে শুরু করে।
বিজয়ের অবস্থান ধরে রাখতে এর প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা জব্বার কম্পিটিটরকে কপিরাইট আইনে মামলা, সরকারের নির্দেশনায় বিজয় কিবোর্ড ম্যান্ডেটরি করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কন্ট্রোভার্সির জন্ম দিনয়েও পারেননি আধিপত্য ধরে রাখতে। আজকের এই পোস্টে জানাবো কিভাবে এই বিজয় কিবোর্ডের উত্থান হয়েছিল এবং কিভাবে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয় এই বাংলা লেখার সফটওয়্যারটি।
কম্পিউটার আবিষ্কারের শুরু থেকেই ইনপুট দেয়ার জন্য কীবোর্ড লেআউট হিসেবে কী-ওয়ার্ড লেআউট উল্লেখ করা হয়েছিল যা 1874 সালের টাইপরাইটারের জন্য ডেভলপ করা হয়েছিল। বাংলা ভাষায় মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পের জন্য 1965 সালে প্রখ্যাত লেখক মুনীর চৌধুরী টাইপরাইটারের জন্য বাংলা ভাষার প্রথম সাইন্টিফিক লেআউট ডিজাইন করেন। মুনীর কীবোর্ডের এই লেআউটের অক্ষরগুলোকে টাইপ করার জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে টাইপিষ্টরা দ্রুত টাইপ করতে পারেন। কিন্তু আসলে এই লেআউটটি কম্পিউটারে বাংলা লেখার জন্য উপযুক্ত ছিল না।
কম্পিউটারে বাংলা লেখার জন্য শুধু লেআউটই যথেষ্ট নয়, এর জন্য সফটওয়্যার এবং ফন্টেরও প্রয়োজন ছিল, যার জন্য বেশ কয়েকজন individually কাজ করছিলেন। এদের মধ্যে প্রথম বাংলা ইন্টারফেস ডেভলপমেন্টের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সাঈদ শহীদ। 1983 সালে কম্পিউটারে বাংলা ইনপুট নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং 1985 সালের দিকে বাজারে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের জন্য শহীদলিপি নিয়ে আসেন। তার শহীদ লিপির জন্য আরেকটি লেআউট তৈরি করেন এবং বেশ কিছু বাংলা ফন্ট ডেভেলপ করেন। তবে শুধুমাত্র ম্যাকিনটোশ এর জন্য ডেভলপ করা হয়েছিল বিধায় এটি রিচ খুব লিমিটেড হয়ে গিয়েছিল। শহীদ লিপি আসকি ইনকোডিং এর কারণে অন্য কোথাও ব্যবহারের সুযোগ ছিল না, যার কারণে প্রয়োজন ছিল এমন একটি বাংলা ইনপুট ইন্টারফেস যা বাংলা ভাষাকে ডিজিটাল কম্পিউটিং বিশ্বে আরও ভালোভাবে প্রতিষ্ঠা করবে।
বাংলা ভাষার ডিজিটাল ব্যবহারের এই সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন মোস্তফা জব্বার। মোস্তফা জব্বার ছিলেন একজন সাংবাদিক যার কারণে মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্প সম্পর্কে তার বেশ ভালো জ্ঞান ছিল। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি পূর্ণাঙ্গ ও সার্বজনীন সমাধানের অভাব থেকে তিনি তার শিক্ষক মুনীর চৌধুরীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আসকি এনকোডিং ভিত্তিক একটি কিবোর্ড লেআউট তৈরির সিদ্ধান্ত নেন, যা কয়েকটি কিবোর্ড লেআউট এর সাথে মিলিয়ে সহজে বাংলা টাইপ করা যাবে।
1987 সালে তিনি আনন্দ কমপিউটার বিজনেস প্রতিষ্ঠা করেন। টেকনোলজিক্যাল লিমিটেশনের কারণে বাংলা ভাষায় প্রকাশনা তখনও বেশ কঠিন ছিল, যা থেকে মোস্তফা জব্বার বাংলা ভাষার জন্য একটি efficient ডিজিটাল টাইপিং এর কথা চিন্তা করেন। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি প্রথমে ভারতীয় প্রোগ্রামার দেবেন্দ্র যোশীর সহায়তা নেন যিনি বিজয় কিবোর্ড এর প্রথম ভার্সনের কোডিং করেন। আসকি এনকোডিং ব্যবহার করে বাংলা অক্ষরগুলোকে সাজিয়ে লেআউটে সাজিয়ে একটি কিনাপিং করা হয়, যা বাংলা ভাষাকে কম্পিউটারের টাইপিং এর জন্য সহজলভ্য করে।
1988 সালের 16 ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবসে বাংলা ভাষায় প্রযুক্তিগত বিজয়ের প্রতীক হিসেবে বিজয় কিবোর্ড লঞ্চ করা হয়। Initially বিজয় কীবোর্ড ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ডেভেলপ করা হয়। 1989 সালের দিকে মোস্তফা জব্বার সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিজয় বাংলা স্ক্রীপ্ট ইন্টারফেস সিস্টেম বাংলাদেশের কপিরাইট আইনের আওতায় নিজের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হিসেবে রেজিস্ট্রার করেন।
বিজয় কীবোর্ড ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি সেকেন্ড জেনারেশন বাংলা রাইটিং সফটওয়্যার সেসময় বাজারে এসেছিল। যেগুলোর মধ্যে প্রশিকা শব্দ এবং প্রবর্তনও উল্লেখযোগ্য। বিজয় কীবোর্ড এর সাফল্য থেকে এর বিজনেস অপরচুনিটি অনুভব করে বিজয় কীবোর্ড এর দ্বিতীয় ভার্সনও পেটেন্ট এর জন্য অ্যাপ্লাই করা হয়। যদিও সেসময় বাংলাদেশের সফটওয়্যারের পেটেন্ট নিয়ে Capable কেউই ছিল না।
নব্বই এর দশক ছিল বিজয় কিবোর্ডের জন্য স্বর্ণযুগ, যা মোটামুটি 2010 সাল পর্যন্ত দুই দশক continue করেছিল। নব্বই দশকে আনন্দ কমপিউটার্সের নিজস্ব টিম অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের জন্য সফটওয়্যারটি ডেভেলপ করার কাজ করছিল যেখানে মনিরুল আবেদন পাপ্পান ছিল অন্যতম একজন সদস্য। 1993 সালে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বিজয় কিবোর্ড এর comfortable version রিলিজ করা হয়। বিজয় কীবোর্ড এর সবচেয়ে এডভান্টেজ ছিল এটি খুবই stable & comfortable. পাশাপাশি আনন্দ কমপিউটার্স এর টিম প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফন্ট এড করতে থাকে সফটওয়ারের বান্ডেলে। গত তিন দশকেরও বেশি সময়ে বিজয়ে ১১০ টিরও বেশি ফন্ট এড করা হয়েছে। সুতুনি নামে একটা ফন্ট তৈরি করা হয়েছিল যা বাংলাদেশের জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিভিন্ন সরকারি নথি ও প্রকাশনায় এটি স্ট্যান্ডার্ড ফন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
90 দশকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিজয় কিবোর্ড
একটি স্ট্যান্ডার্ডে পরিণত হয় এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দপ্তর, আদালত এবং সরকারি নথিপত্র তৈরি ও সংরক্ষণে বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। সরকারি কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন অফিস-আদালত, ইন্ডাস্ট্রিতেও বিজয় কিবোর্ড এর ব্যবহার বাড়তে থাকে। বিভিন্ন কম্পিউটার বাংলা টাইপিং এর প্রশিক্ষণের জন্য বিজয় কিবোর্ডকে বাছাই করা হচ্ছিলো। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার কিবোর্ড ব্যবহার করে বাংলা লেখার জন্য বিজয় কীবোর্ড ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। একই সাথে মোস্তফা জব্বার বাংলাদেশ বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি প্রতিষ্ঠা এবং টেলিভিশনে কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ক প্রোগ্রামে যুক্ত হয়েছিলেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের কম্পিউটার জগতে তিনি একজন অন্যতম আইকনিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন এবং তার তৈরি বিজয় কিবোর্ড আরো বেশি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এর পাশাপাশি ব্যাপক ফন্ট কালেকশন এর কারণে বাংলা প্রকাশনা এবং অফিশিয়াল ডকুমেন্ট, অফিস-আদালতসহ সর্বক্ষেত্রে বিজয় কিবোর্ড এর ব্যবহার বাড়তে থাকে। এমনকি বিভিন্ন জব সেক্টরে বিজয় কিবোর্ডে লেখার দক্ষতা থাকা একটি যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে।
বিজয় কীবোর্ড এর জনপ্রিয়তা আরো বাড়তে থাকে যখন 2000 সালে বিজয় 5.1 বা বিজয় ২০০০ ভার্সনটি রিলিজ করা হয়। এই ভার্সনটি বাংলা লেখায় নতুন মাত্রা নিয়ে আসে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বেটার অপটিমাইজ করা এই ভার্সনটি বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার হিসেবে বিজয় কিবোর্ড এর গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়িয়ে তোলে। কেননা ততোদিনে উইন্ডোজ মার্কেটের ডমিনেন্স প্লেয়ার হয়ে উঠেছিল এবং সরকারি, ব্যবসায়ী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজয়ের এই সংস্করণটির ব্যবহার দ্রুত বাড়তে থাকে। তবে এই ভার্সনটিও আসকি এনকোডিং এর উপর নির্ভরশীল ছিল। বিজয় কীবোর্ডে ইউনিকোড সাপোর্ট না আসায় ইন্টারনেট এবং ফাইল আদান প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্রোকেন ক্যারেক্টার ইস্যু ফেস করতে হতো।
এই পরিস্থিতিতে 2003 সালের দিকে অভ্র কিবোর্ড নামে একটা ওপেনসোর্স সফটওয়্যার বাজারে আসে যা ইংলিশ লেখাকে বাংলায় কনভার্ট করার ফিচারসহ ইউনিকোড সাপোর্ট করতো এবং ফ্রিতে ব্যবহারের সুযোগ এর কারণে এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে থাকে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে। অন্যদিকে ইউনিকোড সাপোর্ট থাকার গুরুত্ব অনুধাবন করে 2004 সালে মোস্তাফা জব্বার বিজয় কিবোর্ড এর নতুন সংস্করণ বিজয় একুশে রিলিজ করেন এবং ধাপে ধাপে অন্যান্য বিজয় সফটওয়ারেও ইউনিকোড সাপোর্ট এড করতে থাকেন। তবে সরকার প্রধান অফিস এবং আদালতের ততদিনে বিজয় কিবোর্ড প্রধান হয়ে ওঠার কারণে মূল ধারার সফটওয়্যারগুলো তখনও প্রবেশ করতে পারেনি এবং বিজয় কিবোর্ড এখনও dominance বজায় রেখেছিল। সে সময় ঢাকা ট্রিবিউন এর হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে 32000 ইউনিট বিজয় কিবোর্ড বৈধভাবে বাংলাদেশে আমদানি করা হতো এবং 2008 সালের মার্চ থেকে 2013 সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় 30 লাখ ইউনিট আমদানি করা হয়েছিল। যদিও মার্চ 2008 এর আগের কোন ডেটা অ্যাভেলেবেল নেই কিন্তু মোস্তফা জব্বারের অনুমান অনুযায়ী এর আগের দশ বছরের মধ্যে প্রায় 30 থেকে 35 লাখ ইউনিট আমদানি করা হয়েছিল। আবার বিজয় কিবোর্ড এর জনপ্রিয়তা শুধু বাংলাদেশই সীমাবদ্ধ ছিল না, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরায় এটি ব্যবহার হতো।
অভ্র এবং অন্যান্য ফোনেটিক কীবোর্ড 2003 সালে বাজারে আসলেও অফিস আদালতে বিজয় ততোদিনে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকায় অভ্র তেমন সুবিধা করতে পারছিল না। 2004 সালে বিজয় একুশে নামে নতুন একটি সফটওয়্যারের ইউনিকোড সাপোর্ট নিয়ে আসলেও বেশিরভাগ মানুষই নতুন করে টাকা খরচ করে বিজয়ের আরেকটি সফটওয়্যার কিনতে চায়নি। অভ্রতে ইউনিকোড সাপোর্ট থাকায় ইন্টারনেটে বাংলা লেখা সম্ভব হচ্ছিল। কিন্তু সেসময়ে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশ ওয়াইম্যাক্সের কল্যাণে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়তে থাকে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ার সাথে সাথে বাংলা লেখার প্রয়োজনীয়তাও বাড়তে থাকে। আর এসএমএস এ ফোনেটিক টাইপিং অভ্যস্ত জেনারেশনের ইউজাররা বাংলা লেখার জন্য কমপ্লিকেটেড একটি লেআউট মুখস্ত করার চেয়ে অভ্রকেই গ্রণ করে নিতে শুরু করে।
2012-2013 সালের দিকে দেশে 3G Service Available হওয়ার পর মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়তে থাকে। একই সময়ে দেশে শুরু হয় স্মার্টফোনের বিপ্লব। 2012 সালেও স্মার্ট ফোনে ফোনেটিক টাইপিং এর জন্য চলে আসে Ridmik Keyboard. স্মার্টফোনে কীবোর্ড নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বিজয় অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল বলা যায়। এর পাশাপাশি বিজয় কিবোর্ডের UI, ডিজাইন কোনটিই ইউজারদের আকর্ষণ করতে পারেনি সফটওয়্যারটি। সবমিলিয়ে থার্ড জেনারেশনের ফ্রি টাইপিং অভ্র সফটওয়্যারের কাছে পরাস্ত হতে হয়েছিল বিজয়কে।
2010 সালের মাঝামাঝি থেকে অফিস-আদালতেও বাংলা টাইপিং এর জন্য বিজয় কীবোর্ড জানাটা বাধ্যতামূলক থাকে না বরঞ্চ বাংলা টাইপ করতে পারাটাই একমাত্র ক্রাইটেরিয়া হয়ে ওঠে। যার কারণে অভ্রর ব্যবহার আরও দ্রুত বাড়তে থাকে। এছাড়া 2010 সালের অভ্রর সাথে legal dispute বিজয়ের পিছিয়ে পড়ার পেছনে অন্যতম একটি কারণ। মোস্তফা জব্বার সেই নব্বই দশক থেকে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি এবং কপিরাইট বিষয়ে সচেষ্ট ছিলেন। কীবোর্ড ডেভেলপমেন্টের এক পর্যায়ে অভ্র একটি ইউনিবিজয় নামে একটি লেআউট introduce করে। লেআউটটি ডেভেলপ করার আগে অভ্র টিম থেকে মোস্তফা জব্বারের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
তাই অভ্র টিম বিজয়ের সাথে কপিরাইট আইন মেনে বিজয়ের সাথে ৮টি পরিবর্তনে মেনে ইউনিবিজয় লেআউটটি রিলিজ করে যাতে বিজয় কীবোর্ডে অভ্যস্ত ইউজাররা তাদের প্রেফারেন্স অনুযায়ী ইন্টারনেটের সর্বক্ষেত্রে বাংলা লিখতে পারে, যাতে বাংলা ভাষার প্রসারে কোন বাধা না থাকে। যদিও মোস্তফা জব্বার ইউনিবিজয়ের এই পার্থক্যগুলো অবহেলা করে অভ্রর বিজয়ের সাথে 99% মিল থাকার দাবি করে কপিরাইট আইনে মামলা করেন। যার প্রেক্ষিতে একসময় অভ্র বাধ্য হয় ইউনিবিজয় লেআউটটি সরিয়ে নিতে।
কোনরকম কমপ্লেক্স লেআউট শেখার প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই বাংলা লেখার সুযোগ করে দেওয়ায় অভ্র এবং মেহেদী হাসান খান সেসময়কার ইয়াং জেনারেশন এর কাছে আইকনিক হিরো হয়ে ওঠেন। তাঁর সাথে মোস্তফা জব্বারের এমন dispute এর কারণে সেসময়কার ইয়ং জেনারেশনের রোষানলে পড়েন মোস্তাফা জব্বার। এছাড়া বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি প্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্ট এবং বিগত সরকারের আমলে একজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে তিনি বিজয় কিবোর্ড কে unfaired advantage দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। যেমন- বাংলাদেশে মোবাইল আমদানি ও ম্যানুফ্যাকচারিং এ বিজয় ইন্সটল থাকা বাধ্যবাধকতা করার চেষ্টা করেছিলেন যাতে করে সফটওয়্যার এর লাইসেন্স কিনতে হয় স্মার্টফোন ম্যানুফ্যাকচারারদের। এছাড়া সোশাল মিডিয়ায় বাংলা ভাষা নিয়ে তখর কর্মকান্ডকে বাংলা ভাষার প্রতি তার ভালোবাসা নয় বরং নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ভাষাকে পূজি করার বিষয়ে অনেক সমালোচনা হয়ে থাকে। এ সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের কম্পিউটার জগতের অন্যতম আইকনিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা জব্বার এবং তার তৈরি করা বিজয় হারিয়ে যাচ্ছে বলা যায়।